বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৪৯ অপরাহ্ন

News Headline :
মানববন্ধনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন শ্যামনগরে গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে সড়কে ভ্যান চালকের মৃত্যু রাজশাহীর মোহনপুরে মদ পানে ৩ জনের মৃত্যু, গ্রেফতার ২ রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাতটি থানার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা যানজট নিরসন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে আরএমপি’র মতবিনিময় সভা শ্যামনগরে এবার কৃষকরা আমন ধানের আশানুরুপ ফলন পেয়েছে পাবনায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ১জন আহত শাজাহানপুরে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত মান্দায় বিল উন্মুক্তের দাবিতে জেলেদের সংবাদ সম্মেলন সভাপতির স্বৈরাচারী আচরন স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিতে পাবনা শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের কার্যক্রম স্থবির

বেড়া থানার এএসআই ভুল আসামিকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে

Reading Time: 2 minutes

নিজস্ব প্রতিনিধি:
মাদক মামলায় পাবনার বেড়া মডেল থানার পৌর এলাকার স্যান্যালপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন(৭০) একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জিআর ৬২/২০১৬ নম্বর মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত এই পলাতক আসামীকে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছে পুলিশ। মূল আসামি ধরতে না পেরে তার পরিবর্তে একই নামের পার্শ্ববর্তী গ্রামের আনোয়ার হোসেন (৩০) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বিনা অপরাধে জেলহাজতে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে বেড়া মডেল থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। ভুল আসামি গ্রেফতারের ঘটনায় থানা পুলিশকে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত।ভুক্তভোগী পরিবার ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের মাদক মামলার পলাতক আসামী বেড়া থানার স্যান্যালপাড়া গ্রামের মৃত ওহাব মোল্লার ছেলে আনোয়ার হোসেন (৭০)। মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী আনোয়ারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। কিন্তু পরোয়ানা সঠিকভাবে যাচাই না করেই গত ১০ জুন পার্শ্ববর্তী সাঁথিয়া থানা এলাকার করমজা পূর্বপাড়া গ্রামের ওহাব ব্যাপারীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩০)কে গ্রেফতার করেন এএসআই আনোয়ার। মামলায় কোন সম্পৃক্ততা না থাকা সত্ত্বেও আনোয়ারকে পরদিন ১১ জুন আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায় বেড়া থানা পুলিশ। নিরপরাধ আনোয়ার বিনা দোষে ছয়দিন জেল হাজতে কাটান।এদিকে পরবর্তীতে আদালতে জিজ্ঞাসাবাদে করমজা গ্রামের এই আনোয়ার সাজাপ্রাপ্ত মাদক ব্যবসায়ী আনোয়ার নন বলে নিশ্চিত হন বিজ্ঞ বিচারক সুরাইয়া সরকার। আদালতে দাখিল করা নাগরিক সনদ,প্রত্যয়ন পত্রসহ প্রয়োজনীয় নথি পর্যালোচনা করে আদালত আনোয়ারকে ০৬ জুলাই পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন জামিন দেন এবং বিষয়টি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।এদিকে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য এএসআই আনোয়ার ভুক্তভোগী আসামিকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।অথচ চলতি মাসের ০৯ তারিখে শ্রেষ্ঠ ওয়ারেন্ট তালিমকারী অফিসার হিসেবে এই এএসআই আনোয়ার পাবনা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি কর্তৃক মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সম্মাননা স্মারক পুরুস্কারও পান।ভুক্তভোগী আনোয়ার বলেন,১০ জুন বিকেলে এএসআই আনোয়ার আমার বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসা করে, তোর নাম কী?আমি বলি, আনোয়ার।বাবার নাম কী? আমি বলি ওহাব ব্যাপারি। তখন আমাকে বলে থানায় চল,তুই সাজাপাপ্ত আসামি। আমি ও আমার পরিবারের লোকজন বার বার তার ভুল হচ্ছে জানালেও সে তোয়াক্কা করেনি। ধরে নিয়ে যায়। সারারাত থানায় আটকে থাকাবস্থায় পরিবারের লোকজনেরও কোন কথা সে শোনেনি। পরের দিন আমাকে চালান করে দেয়। পরে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হলে, ছয়দিন পর পুলিশই টাকা খরচ করে আমাকে বের করে। এ মাসের ০৬ তারিখে হাজিরা দিছি। আমি গরিব মানুষ। কিভাবে এই মামলা থেকে রেহাই পাব বুঝতে পারছিনা।
আনোয়ার আরো বলেন,এখন আবার আদালতের নির্দেশে তদন্ত হচ্ছে। আমি পুলিশের বিরুদ্ধে কিছু না বলি তার জন্য নানাভাবে চাপ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এএসআই আনোয়ার নিজের ভুলে নিজে ফেঁসে গেছে।এদিকে,এসআই আনোয়ারের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এবারই প্রথম নয়।সূত্র জানায়,চলতি বছর জানুয়ারি মাসে নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের রাকসা বাজার থেকে বাশার ফকির নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে তিন লিটার দেশিয় মদসহ আটক করে বেড়া থানার এসআই শাহীন ও এএসআই আনোয়ার। পরে তিন হাজার টাকার বিনিময়ে সেই আসামিকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় এসআই শাহীন ক্লোজ হলেও এএসআই আনোয়ার অফিসিয়ালি ডিউটিতে না থাকায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। গত এপ্রিল মাসে রাকশা বাজার থেকে এএসআই আনোয়ার এক চোরকে আটক করে পুলিশের পিকআপে উঠালে সেখান থেকেরওই চোর হ্যান্ডকাপসহ পালিয়ে যায়। এ ঘটনাতেও অফিসিয়াল ডিউটিতে থাকায় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি জেলা পুলিশ। এ বিষয়ে এএসআই আনোয়ার বলেন, গ্রেফতারের সময় করমজার আনোয়ার অস্বাভাবিক আচরণ করে এবং সে বিষয়টি পরিষ্কার করতে না পারায় থানায় আনা হয়। আপনি সামনা সামনি আসেন ফোনে এর বেশি কিছু বলতে পারবো না বলে ফোন কেটে দেন।বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাদিউল ইসলাম বলেন, দুই আনোয়ারের বাবার নামে মিল থাকা এবং গ্রেফতারের সময় আনোয়ার ঘটনায় জড়িত না থাকার বিষয়ে কোন কথা বলেনি বলে এএসআই আনোয়ার জানিয়েছেন। আমরা আদালতের নির্দেশে বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।বেড়া-সাঁথিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্লোল কুমার দত্ত বলেন, গ্রেফতার হওয়া আনোয়ার এক সময় স্যান্যালপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন, দন্ডপ্রাপ্ত না হলেও তার নামে আলাদা মামলা আছে। এ কারণে ভুলবোঝাবুঝি হয়েছে। আদালতের নির্দেশনায় বিষয়টির তদন্ত চলছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com